বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:০৭ পূর্বাহ্ন
নাইজেরিয়ার গবেষকেরা নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধী টিকা (ভ্যাকসিন) আবিষ্কারের দাবি করেছেন। ‘কভিড-১৯ রিসার্চ গ্রুপের’ অর্থায়নে পাওয়া এই টিকাটি ‘শতভাগ কার্যকর’ বলে শুক্রবার দেশটির গবেষকরা সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দেন।
টিকার এই খবর নাইজেরিয়ার তিনটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করেছে। এর মধ্যে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী গণমাধ্যম বলে পরিচিত দ্য গার্ডিয়ানও (নাইজেরিয়ান গার্ডিয়ান) রয়েছে।
গবেষক দলের প্রধান আদলেকে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ওলাদিপো কোলাওলে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভ্যাকসিনটি আফ্রিকান অঞ্চলের মানুষদের জন্য এখন প্রস্তুত করা হচ্ছে।
আফ্রিকার প্রসিদ্ধ গবেষক কোলাওলে বলছেন, অন্য অঞ্চলের মানুষদেরও ভ্যাকসিনটি সরবরাহ করা হবে।এই ভ্যাকসিন তৈরির জন্য তহবিল দিয়েছে ট্রিনিটি ইমিউনোডিসিয়েন্ট ল্যাবরেটরি এবং হেলিক্স বায়োজেন কনসাল্ট।
গবেষকেরা এমন দাবি করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বিষয়টি নিয়ে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। ভ্যাকসিন আবিষ্কার যেমন জটিল প্রক্রিয়া তেমনি এর বৈশ্বিক অনুমোদন পাওয়াও বেশ সময় সাপেক্ষ। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা শীর্ষ স্থানীয় কোনো স্বাস্থ্য বিষয়ক জার্নাল থেকে স্বাধীন বিশ্লেষণের আগে এ বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা যাবে না।
নাইজেরিয়ার গবেষকেরা অবশ্য ভ্যাকসিনটি নিয়ে খুব আশাবাদী। সংবাদ সম্মেলনে তারা জোর গলায় বলেছেন, এটি কোনোভাবেই ভুয়া কিছু নয়।
কোলাওলে জানান, আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য গবেষকেরা সার্স-কভ-২ জিনোম আবিষ্কার করতে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। এরপর ভ্যাকসিন তৈরির নির্বাচিত কয়েকটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভ্যাকসিনটি খুঁজে পেয়েছেন।
নাইজেরিয়ার গণমাধ্যম জানায়, ভ্যাকসিনটির এখনো নাম ঠিক করা হয়নি। আন্তর্জাতিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ শেষে বাজারে আসতে আসতে সময় লাগবে দেড় বছরের বেশি।
আদলেকে ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক সলোমন আডেবোলা ভ্যাকসিনের খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, এই মহামারীতে ভ্যাকসিন পাওয়ায় আমি আনন্দিত। মানুষের হাতে ভ্যাকসিন তুলে দেয়া পর্যন্ত গবেষকদের আমরা সর্বোচ্চ সাহায্য করবো।
কর্নস্টোন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জুলিয়াস ওলোকের দাবি, ‘আমরা বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করে ভ্যাকসিনটির বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছি। ভ্যাকসিনের খবর সত্য। আফ্রিকানদের টার্গেট করে ভ্যাকসিনটি তৈরি করা হলেও অন্য জাতিগোষ্ঠীর জন্যও কাজ করবে। এটা অবশ্যই কাজ করবে। ফেইক হবে না। এই ফলাফল নিবেদনের অংশ। অনেক বৈজ্ঞানিক চেষ্টার পর আমরা সফল হয়েছি।
কোনো প্রতিষেধক না থাকা কভিড-১৯ রোগের টিকা কিংবা ওষুধ বের করতে চীন, আমেরিকা এবং ব্রিটেনের মতো দেশ উঠেপড়ে লেগেছে। তিনটি দেশই বলছে, সেপ্টেম্বরের ভেতরে অন্তত যে কোনো কোম্পানির একটি ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। সেই ভ্যাকসিন পাওয়া গেলেও সাধারণ মানুষের হাতে আসতে এক বছরের বেশি সময় লেগে যাবে।
Leave a Reply