বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল,নোয়াখালী: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ঝর্ণা বেগম (২০) নামের এক গৃহবধু আত্নহত্যা করেছে, এ ঘটনায় নিহতের স্বামী সাহাব উদ্দিনকে আটক করেছে চরজব্বার থানা পুলিশ। তবে এটি সুপরিকল্পিত হত্যা বলে দাবী করছেন নিহতের পরিবার।ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার ভোর রাতে সুবর্ণচর উপজেলার ৫ নং চরজুবিলী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম চরজুবিলী গ্রামে।
খবর পেয়ে চরজব্বার থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এসময় নিহতের ঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ।নিহতের বাবা আবুল কালাম অভিযোগ করেন বলেন, ঝর্না বেগমকে তার ননদ পারুল বেগমের স্বামী হুমায়ুন একাধিকবার জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছে, ধর্ষণের ঘটনায় ননদ জামাই হুমায়নকে আড়াল করতে তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। তবে সম্পূর্ণ ঘটনা রহস্যজনক বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আবুল কালাম বাদী হয়ে চর জুবলী গ্রামের মাহে আলমের পুত্র নিহতের স্বামী সাহাব উদ্দিন (২৬), ভগ্নিপতি মোঃ হুমায়ুন (৩৫), পিতা: সিরাজুল ইসলাম, সাং- উত্তর কচ্ছপিয়া, ০৬নং ওয়ার্ড, সাহাব উদ্দিনের পিতা মাহে আলম (৬৫), মাতা হাজরা বেগম (৪৫), ভাই নুর উদ্দিন (৩০), মোঃ জসিম (৩৫) সর্ব সাং- চরজুবলী, ০২ নং ওয়ার্ড, ০৫ নং চরজুবলী ইউপি আসামী করে চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নিহতের পিতা আবুল কালাম অভিযোগ করে বলেন, “বছর দুয়েক আগে চর জুবলী গ্রামের মাহে আলমের পুত্র সাহাব উদ্দিন (২৬)এর সাথে ঝর্ণা বেগমের বিয়ে হয়। ৬ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে।তার স্বামী সাহাব উদ্দিন চট্টগ্রামে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। গত ২৫জুন রাতে স্বামী কর্মস্থল চট্রগ্রামে থাকার সুবাধে নিহতের ননদের স্বামী হুমায়ুন চট্রগ্রাম থেকে শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে এসে গভীর রাতে তার থাকার রুমে প্রবেশ করে তাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে।
তিনি আরো বলেন,কিছুদিন আগেও হুমায়ুন আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। লোকলজ্জার ভয়ে আমার মেয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর শাশুড়ি ছাড়া কাউকে ঘটনা জানায়নি।এই বিষয়টি তার স্বামী ও শ্বশুর শাশুড়িকে জানানোর পর সে চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে চলে আসে। ঝর্ণা তার মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। মেয়ে ফোন পেয়ে তার মা শ্বশুর বাড়ী গেলে মেয়ের শ্বশুর শাশুড়ি হাজেরা বেগম ঘটনা সুরাহা করবে বলে তাকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
গত ২৯ জুন রাত নয়টায় দিকে সর্বশেষ মেয়ের সাথে মুঠোফোনে কথা হয় বাবার । মেয়েবাবার কাছে এবারের ঈদে একটি ছাগল দেয়ার ও আবদার করেন।এরপর ৩০ জুন মঙ্গলবার সকালের দিকে স্থানীয় এলাকার মেম্বারের কাছে মুঠোফোনে জানতে পারেন মেয়ে ফাঁসি দিয়েছে। এই খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মেয়েরে চুল ও পরনের কাপড় ভিজা দেখে তিনি এটি এটি সুপরিকল্পিত হত্যা বলে দাবী করছেন।
স্থানীয়রা বলেন, আমরা ২/৩ দিন ধরে শুনে আসছি ৩ দিন আগে নিহতের স্বামী কর্মস্থল চট্রগ্রামে থাকার সুবাধে নিহতের ননদের স্বামী হুমায়ুন চট্রগ্রাম থেকে শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে এসে গভীর রাতে ঝর্ণাকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে এ বিষয়ে ২৯ জুন সোমবার বিকেলে পারিবারিক ভাবে বৈঠকও হয়। এঘটনার সূত্র ধরে আত্নহত্যা ঘটনা ঘটতে পারে ।
চরজব্বার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি) সাহেদ উদ্দিন বলেন, এঘটনায় এখনো কেউ মামলা করেনি, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট হতে পেলে জানা যাবে হত্যা নাকি আত্নহত্যা।
Leave a Reply