রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন

গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে ৩ জনের মৃত্যু

প্রতিবেদক: ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মা-বাবা ও শিশুসন্তান সহ একই পরিবারের তিন জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনাটি গত শনিবার (৪ জুলাই) ঘটলেও বিষয়টি বুধবার প্রকাশ্যে আসে। বাড়ির মালিক ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

বুধবার দুপুরে নিহতের নিকট আত্মীয় আজিজুল ইসলাম একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে বলেন, গত ৪ জুলাই (শনিবার) ভোরে আশুলিয়ার দূর্গাপুর পূর্বচালা এলাকায় শহীদ হাজীর মালিকানাধীন দুই তলা বাড়ির নিচতলার ভাড়া দেওয়া কক্ষে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- আবুল কাশেম (২৮), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২২) ও ছয় বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া সন্তান আল-আমিন। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল থানার চন্ডীপাশা গ্রামে।

নিহত আবুল কাশেম স্থানীয় কন্টিনেন্টাল নামে একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। তার স্ত্রী একই এলাকার সাউদার্ন নামে অপর একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম জানান, বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তবে এর আগে ঘটনার দিন তাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। কেন জানানো হয়নি সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনার বিষয়টি জানা গেলেও অধিকতর তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। এছাড়া বাড়ির মালিক পলাতক থাকায় ওই বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ ছিল কি না সে ব্যাপারটিও নিশ্চিত নয়। তবে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নিহতের প্রতিবেশী অটোচালক শহীদুল ইসলাম জানান, গত তিন মাস পূর্বে আবুল কাশেম পরিবার নিয়ে আশুলিয়ার দূর্গাপুর এলাকায় শহীদ হাজীর দুই তলা বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ ভাড়া নেয়। তারা উভয়ই গার্মেন্টসে কাজ করত। গত শনিবার ভোরে গার্মেন্টসে কাজে যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে ওঠে তারা। এ সময় রান্নার জন্য দিয়াশলাই জ্বালালে হঠাৎ বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠে আগুন ধরে যায়। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আবুল কাশেম, তার স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান আল-আমিনকে দেখতে পায়। পরে তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে স্থানীয়রা।

নিহতের মামা আজিজুল ইসলাম বলেন, ভাগিনা কাশেমসহ তার পুরো পরিবার অগ্নিদগ্ধ হয়েছে এমন খবরে ছুটে আসেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে তাদের একটি অটোরিকশায় তুলে হাসপাতালে প্রেরণ করা হচ্ছে বলে তিনি দেখতে পান। এর পরদিন রোববার রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাশেমের শিশু সন্তান আল-আমিন মারা যায়।

তিনি আরো বলেন, এনাম মেডিকেলের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা সম্ভব নয় চিন্তা করে অগ্নিদগ্ধ কাশেম ও তার স্ত্রীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করান তারা। এ সময় হাসপাতালে নেয়ার পথে ভাগিনা কাশেমেরও মৃত্যু হয়। পরে ফাতেমার অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেও মারা যায়।

এ ঘটনায় বাড়ির মালিক পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© All rights reserved © 2017 nktelevision
Design & Developed BY Shera Web