শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৫ পূর্বাহ্ন

হাতিয়া ভাসানচর পরিদর্শনে যাচ্ছেন ৪০ রোহিঙ্গা নেতারা

প্রতিবেদক: নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে বসবাসের উপযোগী কিনা তা দেখতে সেখানে যাচ্ছেন কক্সবাজারের শরাণার্থী শিবিরের রোহিঙ্গা নেতারা। কমপক্ষে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ওই দ্বীপে পাঠানোর পরিকিল্পনা আছে সরকারের। এরই অংশ হিসেবে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দু’জন নারীসহ ৪০ রোহিঙ্গা ভাসানচরে উদ্দেশে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট শরণার্থী শিবির থেকে রওনা দিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে একটি রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলটি উখিয়ার ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করেন। সকালে তাদের চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা। সেখান থেকে  বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জলযানে করে ভাসানচরে যাবেন। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মাহবুব আলম তালুকদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের আশা, রোহিঙ্গা নেতারা দেখে এসে অন্যদের বোঝালে রোহিঙ্গারা ভাসানচর যেতে রাজি হবেন। তবে এই দলের সঙ্গে জাতিসংঘের কোনও সংস্থার প্রতিনিধি বা গণমাধ্যমর্কীরা থাকছেন না।

এ বিষয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) মুখপাত্র মোস্তফা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এ সর্ম্পকে আমরা কিছুই জানি না। আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি। তাছাড়া ভাসানচরে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তাদের স্বজনরাও যোগাযোগ করতে পারছেন না। এখনও আমরা সরকারের নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছি।

জানতে চাইলে সেনাবাহিনীর রামু-১০ পদাতিক ডিভিশনের মুখপাত্র মেজর ওমর ফারুক বলেছেন, শনিবার ভোরে ৪০ জনের রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল ভাসানচরের রওনা দিয়েছেন। তারা মঙ্গলবার ফিরবেন। ভাসানচরে রোহিঙ্গা নেতাদের আগস্টের শুরুতে যাওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

শুক্রবার টেকনাফের নয়াপাড়া শিবিরে গিয়ে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা নেতারা তিন চারদিনের প্রস্তুতি নিয়ে ক্যাম্প ইনচার্জের (সিআইসি) কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর সেনা প্রহরায় মাইক্রোবাসে করে উখিয়া রওনা দিয়েছেন। প্রতিনিধিরা উখিয়ায় পৌঁছানোর পর শুক্রবার রাতেই তাদের সঙ্গে দেখা করে আরআরসি মাহবুব আলম তালুকদার ভাসানচরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

আগেই সব প্রতিনিধির করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে জানিয়ে টেকনাফ জাদিমুরা শরণার্থীশিবিরের হেড মাঝি কালাম বলেন, ‘শুক্রবার রওনা দেওয়ার আগে তাদের সবার সাধারণ স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়েছে।

টেকনাফের শালবন রোহিঙ্গা শিবিরের হেড মাঝি নুর বলেন, ভাসানচর যদি বসবাসের উপযুক্ত হয় তবে অবশ্যই রোহিঙ্গারা সেখানে যাবে। আমরা স্বচক্ষে দেখে এলে সবাইকে বোঝাতে পারবো। সেজন্যই সেখানে যাওয়া।

ভাসানচরে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর মামুন বলেন, ‘এখানে থাকা ৩০৭ রোহিঙ্গা খুবই ভালো আছে। তারা আরাম করে খাচ্ছে-ঘুমাচ্ছে। এখনও তাদের বেসামরিক প্রশাসনের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। আমরাই (নৌবাহিনী) তাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করছি।’

এদিকে প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পরই বেসামরিক প্রশাসনের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়াটি শুরু হবে বলে জানান নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান।

নোয়াখালীর জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা নেতাদের একটি দল সন্ধ্যায় ভাসানচরে পৌছানোর কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচরে আশ্রয় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধ এবং এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের এক সভায় ভাসানচরের জন্য নেওয়া প্রকল্পের খরচ ৭৮৩ কোটি টাকা বাড়িয়ে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা করা হয়। বাড়তি টাকা বাঁধের উচ্চতা ১০ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৯ ফুট করা, আনুষাঙ্গিক সুবিধা বৃদ্ধিসহ জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের জন্য ভবন ও জেটি নির্মাণে খরচ হবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  
© All rights reserved © 2017 nktelevision
Design & Developed BY Shera Web