বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর হাতিয়া মধ্যযুগীয় কায়দায় নৃশংসভাবে এক নববধূকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যৌতুকের টাকার জন্য পিটিয়ে হত্যা করেছে শ্বশুর বাড়ির লোকজন।এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাৎক্ষণিক দু’জনকে আটক করেছে।
নিহত শাবনুর আক্তার (১৯), হরণি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বয়ারচর নবীনগর গ্রামের নূর ইসলাম বুদ্ধির মেয়ে।
শুক্রবার বিকালে পুলিশ নিহতের স্বামীর বাড়ি চানন্দি ইউনিয়নের মেস্তরী বাড়ি থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। এর আগে, শুক্রবার সকালে উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের নলেরচরের রহমতপুর গ্রামের বাহার মেস্তরীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের মা মনোয়ারা বেগম (৩৫) জানান, গত তিন মাস আগে উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের নলেরচরের রহমতপুর গ্রামের ওমান প্রবাসী বাহার মেস্তরীর ছেলে ফরিদ উদ্দিন (২৪)’র সাথে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুকের কিছু টাকা বাকী ছিল। বিয়ের পর থেকে ওই যৌতুকের টাকার জন্য ও ঘরের আসবাবপত্রের জন্য শাবনুরকে একাধিকবার মারধর করে স্বামী। শুক্রবার সকালে মোরগকে খাদ্য দেওয়া দেওয়া নিয়ে নিহত শাবনুরের সাথে তার শাশুড়ি ও ননদের কথা কাটাকাটি হয়। পরে এ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী, শাশুড়ী,ননদসহ শাবনুরকে বেধড়ক পিটিয়ে ঢাক পেটে লাথি দিয়ে গুরুত্বর জখম করে হত্যা করে।
এক পর্যায়ে শাবনুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেলে পথিমধ্য থেকে পুনরায় বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে নিহতের স্বামী মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে প্রচার করে শাবনুর বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। এক পর্যায়ে নিহতের খালু আবুল কালাম ও তার খালা শাবনুরের শ্বশুর বাড়িতে এলে নিহতের স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
নিহতের মা মনোয়ারা বেগম, তার মেয়েকে হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় তিনি জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন।
নিহতের খালু আবুল কালাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শাশুড়ি ও ননদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
হাতিয়া থানার অফিসার ইনাচর্জ (ওসি) আবুল খায়ের জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার এখনো কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পুলিশ।
Leave a Reply