শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০৭:০২ পূর্বাহ্ন

সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সেনা সদস্যদেরকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে কর্তব্য পালনের জন্য সেনাবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দুর্যোগ দুর্বিপাকসহ সকল সময়ে সেনাবাহিনীকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) প্যারেড গ্রাউন্ডে ৭৯তম বিএমএ লং কোর্সের সমাপনীতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সেনা সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমাদের সব সময় এই কথাটা মনে রাখতে হবে যে দেশকে ভালোবাসতে হবে ও দেশের জন্য কর্তব্য পালন করতে হবে। কারণ, তোমরা যে শপথ গ্রহণ করেছ, তার মধ্য দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার বিরাট দায়িত্ব তোমাদের কাঁধে পড়ল। সেই কথাটা সব সময় তোমাদেরকে মনে রাখতে হবে।

১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে পার্সিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশে জাতির পিতার দেয়া ভাষণের উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তোমাদের জাতির পিতা হিসাবে আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সৎ পথে থেকো; মাতৃভূমিকে ভালোবাইসো; ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবা; গুরুজনকে মেনো এবং শৃঙ্খলা বজায় রেখো। তাহলেই জীবনে মানুষ হতে পারবা।’

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুসহ ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে প্রাণ হারানো জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফট্যানেন্ট শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেলের কথা। তিনি জানান, আমার সবচেয়ে ছোট ভাই রাসেলের বয়স তখন ছিল মাত্র ১০ বছর। তার জীবনে একটাই স্বপ্ন ছিল, সে সেনাবাহিনীর অফিসার হবে। তাকেও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করায় সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।

সেনাবাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখন তোমাদের মাঝে আসি, তখন আমার মনে হয় আমিও তোমাদের পরিবারেরই একজন। কাজেই তোমাদের প্রতি সব সময় আমার দোয়া ও আশীর্বাদ থাকবে। তোমরা দেশ সেবা ও দেশের মানুষদের জন্য কাজ করবে।

মহামারির কারণে সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে।

সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহ উল্লেখ করে দেশের উন্নয়নে সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়েও কথা বলেন সরকার প্রধান।

সেনাবাহিনীতে কর্তব্যরতদের দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে সরকার প্রধান বলেন, দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে সেনাসদস্যদের দক্ষ ও উপযুক্ত থাকতে হবে এবং নিজেদেরকে আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। সজাগ থাকতে হবে যাতে সারাবিশ্বের যেখানেই তারা গমন করবে, সেখানেই যেন তারা দেশের সম্মান ও ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে সমর্থ হন।

সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তার পক্ষ হতে বিভিন্ন কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ক্যাডেটদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার মাহমুদুল হাসান শ্রেষ্ঠ চৌকষ ক্যাডেট হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ লাভ করেন। তিনি সামরিক বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করে ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণ পদক’ ও অর্জন করেন।

অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের শপথ বাক্য পাঠ করানো এবং প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্যাডেটদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ উপভোগ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.

পুরাতন খবর

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
© All rights reserved © 2017 nktelevision
Design & Developed BY Shera Web