সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০১:০২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে গত ২৬ ও ২৭ মার্চ বাংলাদেশে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুরু থেকেই মোদির সফরের বিরোধিতা করে আসছিলো ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনায় ৭৭টি মামলা হয়েছে।
এসব মামলায় নজরদারিতে থাকা অনেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে আছেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল ইসলামাবাদী, সহকারী মহাসচিব সাখাওয়াত হোসাইন রাজীসহ বেশ কয়েকজন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, হেফাজতের মধ্যে এখনো সক্রিয় রয়েছেন এমন ২৫ জন নেতা নজরদারিতে রয়েছেন। এঁদের প্রায় সবাই ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনায় দায়ের হওয়া কোনো না কোনো মামলার আসামি।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ওপর ভিত্তি করে গ্রেপ্তারের পরিধি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বেশ কয়েকজন নেতাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন- হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মহাসচিব নুরুল ইসলাম জেহাদী, নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা মাহফুজুল হক, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া (আরজাবাদ), ড. আ ফ ম খালেদ হোসেন (চট্টগ্রাম), মাওলানা নুরুল ইসলাম খান (সুনামগঞ্জ), মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব (বরিশাল), যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার, মাওলানা হাসান জামিল, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহার, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মুফতি কুতুবুদ্দিন নানুপুরী, সহকারী ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া মাদানী, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহিদুল পাশা চৌধুরী (সাবেক এমপি), সহকারী দাওয়াহ সম্পাদক মাওলানা মুশতাকুন্নবী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুর রহামান খান নদভী, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ খুবায়েব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মাওলানা ড. নুরুল আবছার আজহারী, সহকারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন কবির, দফতর সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়ব।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, যারা ‘ওয়াচ লিস্ট’–এ রয়েছেন পর্যায়ক্রমে তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। এছাড়া যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাঁদের বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে যাঁদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের কাছে থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে অন্য যাঁরা জড়িত রয়েছেন তাঁদেরও গ্রেফতার করা হবে।
হেফাজতের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, কয়েক দফা চেষ্টা করেও সরকারের সংগে সমঝোতা করতে না পেরে বেকায়দায় পড়েছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গ্রেফতার আতঙ্কে শীর্ষনেতা থেকে কর্মীরাও এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বেশির ভাগ হেফাজত নেতা রাতে নিজের বাড়িতে অবস্থান না করে বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা বা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকছেন। এমনকি ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগের বিভিন্ন অ্যাপস ছাড়া কেউ কারও সংগে কথাও বলছেন না।
Leave a Reply