বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১৮ অপরাহ্ন
সুবর্ণচর প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নে জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফ (চাল) বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় সুবিধা বঞ্চিত কার্ডধারী জেলেরা।
শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের রেনু মিয়ার বাজারে এই বিক্ষোভ করে জেলেরা। মৎস্য অধিদপ্তরের কার্ডধারী জেলেদের অভিযোগ, কার্ড থাকা সত্বেও তাদের চাল না দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যরা জেলে নয় এমন ব্যক্তিদের চাল দিয়েছেন।
পূর্ব চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে মৎস্য অধিদপ্তরের কার্ডধারী জেলে রয়েছে ৯৩৯ জন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে জাটকা আহরণে বিরত থাকা জেলেদের মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ১৫৫ জন জেলের জন্য প্রতিজন দুই মাসে ৮০ কেজি করে ভিজিএফ চাল বরাদ্ধ এসেছে। পরবর্তী এপ্রিল-মে মাসে বরাদ্ধ আসে ১৭৫ জনের।
ওই ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের কার্ডধারী জেলে সাহাব উদ্দিন মাঝি, আলা উদ্দিন, মো. মোবারক হোসেন, বেলাল উদ্দিন, ইব্রাহিম খলিল, মাঈন উদ্দিন, আবুল কাশেম, দুলাল মাঝি, নিজাম উদ্দিন, লুৎফুর রহমান, মোশারফ হোসে, ৯নং ওয়ার্ডের নিজাম উদ্দিন, জসিম মাঝি, ৪নং ওয়ার্ডের সাহাব উদ্দিন, আলা উদ্দিন, শাহজাহান, আবদুর রহিম ও নিজাম মাঝি বলেন, আমরা সারা বছর নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করি।
জাটকা আহরণে সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে গত চার মাস আমরা নদীতে মাছ ধরতে পারিনি। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে জীবনযাপন করেছি। সরকার আমাদের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দিলেও আমরা কোন চাল পাইনি।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল বাশার মঞ্জু ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে চালগুলো বিতরণ করেন। ইউপি সদস্যরা নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের অনুসারীদের ২০-২৫ কেজি করে চাল দিয়ে প্রকৃত জেলেদের বঞ্চিত করেছেন।
জেলেদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তাদের কার্ড ইস্যু হওয়ার পর কেই একবার অথবা দুইবার চাল পেয়েছেন। আবার কেউ একবারও পাননি।
পূর্ব চরবাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল বাশার মঞ্জু বলেন, তাঁর ইউনিয়নে কার্ডধারী জেলে রয়েছে ৯৩৯ জন। প্রথম দুই মাসে বরাদ্ধ এসেছে ১৫৫ জনের জন্য এবং পরবর্তী দুই মাসে ১৭৫ জনের জন্য বরাদ্ধ আসে। এরমধ্যে যারা প্রকৃত জেলে তাদেরকে প্রতি মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। এতে কোন রকম অনিয়মের সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, বরাদ্ধ পাওয়া জেলেদের বাহিরেও প্রকৃত আরো জেলে রয়েছে, যারা চাল পায়নি। তাদের একটু ক্ষোভ থাকতেই পারে। সরকার কার্ড অনুসারে চাল বরাদ্ধ দিলে জেলেদের এমন ক্ষোভ থাকবে না।
সুবর্ণচর উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. খোরশেদ আলম বলেন, আমাদের ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে জেলেদের মাঝে চালগুলো বিতরণ করা হয়েছে। এতে অনিয়মের সুযোগ নেই। চাল বঞ্চিত প্রকৃত জেলেরা পরবর্তী ধাপে সুযোগ পাবেন।
সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএসএম ইবনুল হাসান ইভেন বলেন, জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের এমন কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply