সোমবার, ০২ অক্টোবর ২০২৩, ০১:৪৪ পূর্বাহ্ন
নোয়াখালী প্রতিনিধি:নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের কর্মচারি পদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ঘর পোড়ানোর মিথ্যে অভিযোগে প্রতিপক্ষকে হয়রানিসহ বসত ঘর উচ্ছেদ, লুটপাট ও হামলার ঘটনায় মহিলা ও শিশুসহ ৩ জনকে আহত করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামের রাজ্জাক মাষ্টারের বাড়িতে।
উপর্যোপুরি হয়রানি শিকার হওয়া ঘরের মালিক নুরনাহার বেগম (৬৫) বাদী হয়ে ১২ জনকে বিবাদী করে সুধারাম মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, রাজ্জাক মাষ্টারের বাড়িতে জমি সংক্রান্ত মামলায় আদালতে পরাজিত হয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঘর পোড়ানোর মিথ্যে অভিযোগে সুধারাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন জেলা প্রশাসনের কর্মচারি আসমা আক্তার। ওই মামলায় আদালতে জামিন চাইতে গেলে আদালত প্রতিপক্ষের পুরুষ ৪ জনকে হাজতে প্রেরণ করেন।
ঘর ও জমির মালিকরা হাজতে থাকার সুযোগে জেলা প্রশাসনের কর্মচারী আসমা আক্তার, সাইফুর রহমান মাসুদ, রেজাউল হক, রেজাউর রহমান, ফজলুর রহমান, সৌরভ, সৈকতসহ প্রতিপক্ষ নুরজাহানের মেয়ে শামছুর নাহার কুসুমের বসত ঘরে জোরপুর্বক প্রবেশ করে ঘরে থাকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও নগদ টাকা কড়ি লুটসহ ঘরটি সমূলে উচ্ছেদ করে পিকআপ ভ্যানে নিয়ে যায় তারা।
এ সময় ঘরের চিহ্ন নিশ্চিহ্ন করতে তারা ভিটির মাটি কেটে সাবাড় করে ফেলে। এমনকি ঘরের চারপাশের জমিজমাও ঘেরাও করে হঠাৎ নিজেদের অবৈধ দখলদারিত্ব প্রমাণ করেন তারা!
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, এ সময় সংঘবদ্ধ প্রতিপক্ষরা শামছুর নাহার (২৮) কে ঘরের মধ্যে পরনের ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ও তার শিশু কন্যা তাহমিনা আক্তার মনি (৬) এবং সানজানা আক্তার মীম (১৬) কে পাশ্ববিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করে।
এ বিষয়ে এলাকার সাথী আক্তার (২৫), জেসমিন আক্তার (৫০), মনির মেকার (৫৫), আবদুল মান্নান (৩০) জানান, শৌ’চিৎকার শোনে আমরা ঘর থেকে বের হয়ে দেখি শামছুন নাহার ও তার ছোট ছোট মেয়েদেরকে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। তারা এ ঘটনায় ভীত হয়ে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার আগেই প্রতিপক্ষরা সন্ত্রাস ও লুটপাট করে গা ডাকা দেয়। পরে স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। তারা আরো বলেন, তখনও ঘরের টিনের বেড়ার ভাংচুরের কিছু অংশ ছিল। পরের দিন সকাল বেলা প্রতিপক্ষরা আবার এসে ঘরের বাকী অংশটুকু নিয়ে যায়।
সাংবাদিকরা মামলার সুত্র ধরে পোড়ানো ঘরের কাছে গেলে উৎসুক জনতাও সেখানে উপস্থিত হয়। যে ঘরটি পোড়ানো হয়েছে বলে মামলা করা হয় সেটি সম্পূর্ণ অক্ষত। এ বিষয়ে আসমা আক্তারের পরিবার ও স্থানীয়রা কোন সদোত্তর দিতে পারেনি।
এদিকে আসমা আক্তার দাবি করে বলেন, আমার ঘরে আগুন দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। ঘরের ছাল জ্বলসে গেছে। তাৎক্ষনিক আগুন না নেভালে পুরো ঘর জ্বলসে যেতো। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী ন্যায়বিচার প্রার্থনা করে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Leave a Reply