বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:২১ অপরাহ্ন
নাছির উদ্দিন, প্রতিবেদক : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সারা দেশে বসতঘর প্রদান করা হলেও তালিকা থেকে বঞ্চিতদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়।সমাজের এমন বঞ্চিতদের খোজ-খবর নেয়ার দায়িত্বশীল অভিভাবকের আজ বড়ই অভাব। দেশের যেই মুহুর্তে ঈদুল আযহার আনন্দে মানুষের ছুটোছুটির স্রোত, ঠিক সেই মুহুর্তে জরাজীর্ন ঘরে বসবাসরত সর্বহারা হওয়ার ভয়ে অসহায় ইউনুছের বৃষ্টিবিমূখ প্রার্থনার কথা শুনে ছুটে আসেন সামাজিক সংগঠন
পূর্বাশার আলো।
শনিবার সকাল ১১ টায় পূর্বাশার আলো সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে সংগঠনের সদস্য লন্ডন প্রবাসী ব্যারিষ্টার শরফুদ্দিন তামজিদের অর্থায়নে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুপ্রভাত চাকমা’র উপস্থিতিতে ইউনুছকে ঘরটি বুঝিয়ে দেয়া হয়।
বলছিলাম নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডস্থ হাদুল্যার বাড়ীর সর্বহারা পঙ্গু ইউনুছের অসহাত্তের কথা। পেশাগত কাজে গাছকাঁটতে গিয়ে ডান পাঁ ভেঙ্গে দীর্ঘ ছয় মাস বিছানায় কাতরাচ্ছেন তিনি। দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে বড় ছেলের ডান হাতে অশ্বাভাবিক টিউমার নিয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসার অভাবে পরিবারে চলছে এক নিরব আর্তনাদ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হাদুল্যার বাড়ীর গাছ থেকে পড়ে পঙ্গু হয়ে যাওয়া ইউনুছ দীর্ঘদিন যাবত জরাজীর্ন ঘরে বসবাস করে আসছেন। কখনো রোদে, কখনো বৃষ্টিতে ভিজে দিনযাপন করছেন তার পরিবার। দেখেও দেখছেনা এমন অভিযোগ
প্রতিবেশি ও আত্বীয়দের উপর। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো অবহেলা ও বেদনাময় কাটিয়ে বেঁচে থাকার স্বাদ সাধনার প্রতি যখন ইউনুছ ক্লান্, ঠিক সেই মূহুর্তে মানবতার টানে পাশে দাঁড়ালেন পূর্বাশার আলো সামাজিক সংগঠন।
পূর্বাশার আলো সংগঠনের এমন ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ ইউনূছ ও তার পরিবার সহ এলাকাবাসী। গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে আলাপচারিতায় আবেগ উৎফুল্ল হয়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেন নি ইউনুছের স্ত্রী ফারভিন আক্তার। তার আবেগঘন অনুভূতিতে প্রকাশ পায় পূর্বাশার আলোর প্রতি একগুচ্ছ ভালোবাসা।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সুপ্রভাত চাকমা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আমরা গ্রামে-গঞ্জে কাজ করছি। কিন্তু আমাদের দৃষ্টি ও সাধ্যের বাহিরেও কিছু থেকে যায়। পূর্বাশার আলোর মত দেশের প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে এমন সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। এসব সংগঠনের মাধ্যমে পাড়া-প্রতিবেশির দ্রুত সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক। তাই এই সংগঠনের সার্বিক মঙ্গল কামনা করছি। এসময় পূর্বাশার আলোর পক্ষ থেকে পিতা কেটে নতুন ঘর উদ্ভোধন করেন সুপ্রভাত চাকমা।
সভাপতি এনামুল হক দুলাল ও সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সার্বিক প্রচেষ্টায় গত বছরের ২৩ আগষ্ট পূর্বাশার আলো সামাজিক সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে সর্বমোট ৩৭ জন অসহায় ও হতদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সংগঠনের ব্যয় করতে হয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। সংগঠনের সভাপতি প্রবাসী দুলাল সহ তার নেতৃত্বে একঝাঁক হৃদয়বান প্রবাসীর অর্থায়নে একবছরের সফলতায় দাঁড়াতে যাচ্ছে পূর্বাশার আলো। গত এক বছরের সফলতায় সর্ববৃহৎ অনুদান ও অসহায় ইউনুছের জন্য ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকায় ঘর নির্মানের আয়োজন করায় লন্ডন প্রবাসী ব্যারিষ্টার শরফুদ্দিন তামজিদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান সংগঠনের সভাপতি এনামুল হক দুলাল।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী মাষ্টার, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক জহির আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন পুটন,অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম দুখু, সমাজ কল্যান সম্পাদক গোলাম হায়দার সোহাগ, সদস্য তোয়া মিয়া রতন, মাসুদ আলম, নূরুল আলম, বেলায়েত হোসেন, মোঃ আরিফ,মোঃ মিলন, সাখাওয়াত হোসেন প্রমূখ।
Leave a Reply